Friday, January 3, 2020

হিন্দু আইনে সম্পত্তির উত্তরাধিকারের নিয়ম http://lyksoomu.com/1CBu3

হিন্দু আইনে দুই ধরনের উত্তরাধিকার পদ্ধতি চালু আছে: (ক) মিতক্ষরা পদ্ধতি (খ) দায়ভাগ পদ্ধতি। বাংলাদেশে দায়ভাগ পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়। এ আইন অনুযায়ী, যারা মৃত ব্যক্তির আত্মার কল্যানের জন্য পিণ্ডদানের অধিকারী, কেবলমাত্র তারাই মৃত ব্যক্তির সপিণ্ড এবং যোগ্য উত্তরাধিকারী। নিম্নে মোট ৫৩ জন সপিন্ডগণের তালিকা ক্রমানুসারে দেওয়া হলঃ ১। পুত্র ২। পুত্রের পুত্র ৩। পুত্রের পুত্রের পুত্র ৪। স্ত্রী, পুত্রের স্ত্রী, পুত্রের পুত্রের স্ত্রী, পুত্রের পুত্রের পুত্রের স্ত্রী। ৫। কন্যা ৬। কন্যার পুত্র ৭। পিতা ৮। মাতা ৯। ভাই, সহোদর ভাই না থাকলে বৈমাত্রেয় ভাই। ১০। ভাই এর পুত্র, সহোদর ভাই না থাকলে বৈমাত্রেয় ভাই এর পুত্র ১১। ভাই এর পুত্রের পুত্র, সহোদর ভাই না থাকলে বৈমাত্রেয় ভাই এর পুত্রের পুত্র। ১২। বোনের পুত্র ১৩। পিতার পিতা ১৪। পিতার মাতা ১৫। পিতার ভাই ১৬। পিতার ভাইয়ের পুত্র ১৭। পিতার ভাইয়ের পুত্রের পুত্র ১৮। পিতার বোনের পুত্র ১৯। পিতার পিতার পিতা ২০। পিতার পিতার মাতা ২১। পিতার পিতার ভাই ২২। পিতার পিতার ভাইয়ের পুত্র ২৩। পিতার পিতার ভাইয়ের পুত্রের পুত্র ২৪। পিতার পিসির পুত্র ২৫। পুত্রের কন্যার পুত্র ২৬। পুত্রের পুত্রের কন্যার পুত্র ২৭। ভাইয়ের কন্যার পুত্র ২৮। ভাইয়ের পুত্রের কন্যার পুত্র ২৯। খুড়ার কন্যার পুত্র ৩০। খুড়ার পুত্রের কন্যার পুত্র ৩১। পিতার খুড়ার কন্যার পুত্র ৩২। পিতার খুড়ার পুত্রের কন্যার পুত্র ৩৩। মাতার পিতা (নানা) ৩৪। মাতার ভাই (মামা) ৩৫। মাতার ভাইয়ের পুত্র (মামার পুত্র) ৩৬। মাতার ভাইয়ের পুত্রের পুত্র (মামার পুত্রের পুত্র) ৩৭। মাতার বোনের পুত্র (মাসির পুত্র) ৩৮। মাতার পিতার পিতা ৩৯। মাতার পিতার ভাই ৪০। মাতার পিতার ভাইয়ের পুত্র ৪১। মাতার পিতার ভাইয়ের পুত্রের পুত্র ৪২। মাতার পিতার বোনের পুত্রের পুত্র ৪৩। মাতার পিতার পিতার পিতা ৪৪। মাতার পিতার পিতার ভাই। ৪৫। মাতার পিতার পিতার ভাইয়ের পুত্র ৪৬। মাতার পিতার পিতার ভাইয়ের পুত্রের পুত্র ৪৭। মাতার পিতার পিতার বোনের পুত্র ৪৮। মাতার ভাইয়ের কন্যার পুত্র ৪৯। মাতার ভাইয়ের পুত্রের কন্যার পুত্র ৫০। মাতার পিতার ভাইয়ের কন্যার পুত্র ৫১। মাতার পিতার ভাইয়ের পুত্রের কন্যার পুত্র ৫২। মাতার পিতার পিতার ভাইয়ের কন্যার পুত্র ৫৩। মাতার পিতার পিতার ভাইয়ের পুত্রের কন্যার পুত্র মোট ৫৩টি শ্রেণির মধ্যে মহিলা শ্রেণী ৫ টি। ১। স্ত্রী, পুত্রের স্ত্রী, পুত্রের পুত্রের স্ত্রী, পুত্রের পুত্রের পুত্রের স্ত্রী (তালিকায় যার স্থান ৪র্থ)। ২। কন্যা (তালিকায় যার স্থান ৫ম)। ৩। মাতা (তালিকায় যার স্থান ৮ম)। ৪। পিতার মাতা ( তালিকায় যার স্থান ১৪ তম)। ৫। পিতার পিতার মাতা ( তালিকায় যার স্থান ২০ তম)। এই ৫ শ্রেণীর মহিলা কোন সম্পত্তি পেলেও সীমিত কিছু শর্ত (যেমন- মৃতের শ্রাদ্ধ) ছাড়া তা হস্তান্তর করতে পারে না। তারা মুলত জীবনস্বত্ব ভোগ করতে পারে। তাদের মৃতুর পর সম্পত্তি পুর্ব মালিকের কাছে ফিরে যাবে, যা নিকটস্থ উত্তরাধিকারী পাবে। কোন পুরুষ উত্তরাধিকারী সম্পত্তি না পাওয়া পর্যন্ত এভাবে সম্পত্তি বারবার মৃত মুল মালিকের কাছে ফিরে যাবে।১ থেকে ৪ নম্বর ক্রমিক পর্যন্ত কেউ জীবিত না থাকলে (৫ নম্বর ক্রমিকের) কন্যা সম্পত্তি পাবে। কন্যাদের মধ্যে কুমারী কন্যার দাবী অগ্রগণ্য, এর পর পুত্রবতী বা পুত্র সম্ভবা কন্যাদের দাবী। কন্যা উত্তরাধিকার সুত্রে সম্পত্তি পেলে তার মৃত্যুতে তার পুত্র সন্তান সম্পত্তি পাবে। তবে কন্যার পুত্র না থাকলে পুত্রের পুত্র কোন সম্পত্তি পাবে না। এক বা একাধিক পুত্র থাকলে তারাই সমুদয় সম্পত্তি পাবে। নিকটবর্তী পুরুষ ওয়ারিশ থাকলে পরবর্তীরা সম্পত্তি পাবে না, যেমন পুত্র থাকলে পুত্রের-পুত্র সম্পত্তি পাবে না। মৃত ব্যক্তির পুত্র ও স্ত্রী থাকলে, স্ত্রী এক পুত্রের সমান অংশ পাবে। একাধিক স্ত্রী থাকলে স্ত্রীর অংশ স্ত্রীদের মধ্যে তুলাংশে বন্টন হবে। স্ত্রী যেরূপ অংশ পাবে, পুত্রের স্ত্রী, পুত্রের পুত্রের স্ত্রী বা পুত্রের পুত্রের পুত্রের স্ত্রীও অনুরূপ অংশ পাবে। মৃত ব্যক্তির সম্পত্তি বন্টনের সময় অংশীদারদের মধ্যে যদি কোন অংশীদার মারা যায়, তবে মৃত ব্যক্তির জীবিত উত্তরাধিকারগণ ওয়ারিশ হবে। স্বামীর মৃত্যুর পর স্ত্রী জীবনস্বত্ব (Life Interest) ভোগ করেন। তার মৃত্যর পর উক্ত সম্পত্তি পুত্রদের মধ্যে বন্টন করে দেওয়া হয়। ৬। একমাত্র হিন্দু ধর্মে দত্তক পুত্র গ্রহনের বিধান আছে। তাই দত্তক পুত্র স্বাভাবিক পুত্রের (১/৩) তিন ভাগের এক ভাগ পাবে। ৭। হিন্দু আইনে সন্ন্যাসী উত্তরাধিকার হয় না। সন্ন্যাসীকে সংসার ত্যাগী হিসাবে মৃত ধরা হয়। ৮। অন্ধ, বধির, মূক, অঙ্গহীন, পুরুষত্বহীন এবং হাবাগোবা পুরুষ ও মহিলাগণ হিন্দু আইনে উত্তরাধিকার হতে বঞ্চিত। এমনকি দূরারোগ্য কুষ্ঠ-ব্যধীগ্রস্ত ব্যক্তিগণও উত্তরাধিকার হতে বঞ্চিত। আইনের দৃষ্টিতে তাদেরকে মৃত হিসেবে বিবেচনা করে তাদের বৈধ সন্তান, পিতামহ ও পিতামহীর উপর উত্তরাধিকারিত্ব বর্তায়। ৯। স্বামী অসতী স্ত্রী রেখে মারা গেলে, সেই অসতী স্ত্রী স্বামীর সম্পত্তি পাবে না। তবে বিধবা স্ত্রী আইন সঙ্গতভাবে সম্পত্তি পাওয়ার পর অসতী হলে প্রাপ্ত সম্পত্তি হতে বঞ্চিত হবে না। অসতীত্বের কারনে মাতাও উত্তরাধিকার হতে বঞ্চিত হয়। তবে অসতীত্বের কারনে কোন নারী, স্ত্রী-লোকের সম্পত্তিতে উত্তরাধিকার হতে বঞ্চিত হয় না। ১০। কোন হিন্দু লোক ধর্মান্তরিত হলে উত্তরাধিকার হতে বঞ্চিত হয়। ১১। হত্যাকারী এবং তার ওয়ারিশ মৃত ব্যক্তির উত্তরাধিকার হতে বঞ্চিত হবে।

উত্তরোধিকার আইন: সর্ব-শেষ হাল-নাগাদ: ৯ জুলাই ২০১৪ http://lyksoomu.com/1CBu4

উত্তরোধিকার আইন: সর্ব-শেষ হাল-নাগাদ: ৯ জুলাই ২০১৪ হিন্দু উত্তরাধিকার আইনে স্বীকৃত উত্তরাধিকারীদের অধিকারের বিভিন্ন লঙ্ঘন ও প্রতিকার দলিল জালিয়াতি কি ও কিভাবে হয়: একজন মৃত ব্যক্তির একাধিক ওয়ারিশ থাকতে পারে। কিন্ত সেই ওয়ারিশেদর বঞ্চিত করার জন্য পাশ্ববর্তী প্রতিবেশী অথবা স্থানীয় প্রভাবশালী লোকেরা নিজের নামে দলিল তৈরী করে প্রকৃত ওয়ারিশেদর মৃত ব্যক্তির সম্পত্তিতে তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা থেকে বঞ্চিত করে থাকে। সংশ্লিষ্ট আইন ও ব্যাখা: দন্ডবিধি ১৮৬০ এর ৪৬৩ ধারা হতে ৪৭৭ ধারা পর্যন্ত জ্বালিয়াতি সম্পর্কিত বিষয়ে বিস্তারিত বিধান রয়েছে । দলিলটি যদি সম্পুর্ণ বা আংশিক মিথ্যাভাবে তৈরী করা হয় তাহলে একে জ্বালিয়াতি বলা যাবে। সম্ভাব্য জ্বালিয়াতি সংঘটনের প্রস্তুতিকে জালিয়াতি বলা যায়না। ধারা ৪৬৩ অনুসারে যদি কোন ব্যক্তি জনসাধারণের বা কোন ব্যক্তি বিশেষের ক্ষতিসাধনের কিংবা কোন দাবি বা স্বত্ব প্রতিষ্ঠার কিংবা কোন ব্যক্তি কে তার সম্পত্তি ত্যাগে প্রকাশ্য বা অনুক্ত চুক্তি সম্পাদনে বাধ্য করবার কিংবা কোন প্রতারণা যাতে প্রতারণা বা যাতে প্রতারণা সংঘটিত হতে পারে, তার উদ্দেশ্যে কোন মিথ্যা দলিল বা দলিলের অংশবিশেষ প্রণয়ন করে, তবে উক্ত ব্যক্তি ‍‍‍‍‍‍‍‍‍জালিয়াতি করেছে বলে গন্য হবে । ধারা : ৪৬৪- মিথ্যা দলিল প্রণয়ন উদাহরণের মাধ্যমে দলিল জালিয়াতির বিষয়টি বোঝা যাবে করিম একটি সম্পত্তি বিক্রয় করে তা জলিলকে অর্পণ করে। করিম পরে জলিলকে তার সম্পত্তি হতে বঞ্চিত করবার উদ্দেশ্যে সে একই সম্পত্তি বাদল এর কাছ কাছে হস্তান্তর সম্পর্কে একটি দলিল প্রণয়ন করে। তার উদ্দেশ্যে জলিল কে প্রদানের ছয় মাস আগেই সম্পত্তিটি বাদলকে প্রদান করা হয়েছে এরকম বিশ্বাস সৃস্টি করা। করিম জালিয়াতি করেছে। জালিয়াতির শাস্তি: যদি কোন ব্যক্তি জালিয়াতি করে, তবে উক্ত ব্যক্তি দুই বত্‍সর পযর্ন্ত মেয়াদের যে কোন বর্ণনার কারাদন্ডে বা অর্থদন্ডে বা উভয়দন্ডে দন্ডিত হবে। বিশ্লেষণ: বতর্মান ধারায় জালিয়াতির অপরাধে দন্ডের বিধান দেওয়া হয়েছে। যে ব্যক্তি জালিয়াতি করে তাকে দুই বত্‍সরের কারাদন্ড বা জরিমানা দন্ড অথবা উভয়বিধ দন্ড দেওয়া যায়। কোন ব্যক্তি যদি দলিল লিখন ও সহি সম্পাদনের কাজে সম্পৃক্ত না থাকে তাকে জালিয়াতির অপরাধে দন্ড দেওয়া যায়না। বাদী পক্ষকে জালিয়াতির অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে হবে। ধারা: ৪৬৮ প্রতারণার উদ্দেশ্যে জালিয়াতি: যদি কোন ব্যক্তি প্রতারণা করবার উদ্দশ্যে কোন জাল দলিল প্রণয়ন বা জালিয়াতি করে, তবে উক্ত ব্যক্তি সাত বত্‍সর পর্যন্ত মেয়াদের কারাদন্ডে দন্ডিত হবে এবং অথর্দন্ডে ও দন্ডিত হবে। বিশ্লেষণ: বর্তমান ধারায় প্রতারণা করবার উদ্দেশ্যে দলির জালিয়াতির অপরাধে সাত বত্‍সরের কারাদন্ড এবং তদুপরি জরিমানার বিধান করা হয়েছে। এই ধারায় বর্ণিত অপরাধটি গুরুতর ধরনের অপরাধ। কোন ব্যক্তি প্রতারণা করবার উদ্দেশ্যে যদি দলিল জাল করে তাহলে ৪৬৮ ধারায় অপরাধ সম্পন্ন হবে। বাস্তবে প্রতারণা না করলেও দন্ড দেওয়া যাবে। প্রতারণার উদ্দেশ্যে ব্যবহারের অভিপ্রায়ে জাল দলিল সৃষ্টি করবার অপরাধে দন্ডিত হবে। ক্ষেত্র বিশেষে আসামীর দন্ড পরিবর্তন হতে পারে । ধারা: ৪৭০প্রতারণামূলকভাবে বা অসাধুভাবে সম্পূর্ণ বা আংশিক প্রস্তুতকৃত যে কোন মিথ্যা দলিল "জাল দলিল"বলে গণ্য হবে। বিশ্লেষণ: "জাল দলিল" কথাটির সাথে জনসাধারণ সুপরিচিত। দলিল জালকরণ বলতে দন্ডবিধির ৪৬৪ ধারায় বর্ণিত মিথ্যা দলিল সৃজনকে বোঝায়। দৃষ্টত: কোন দলিলকে জাল বা তঞ্চকী বলে সাব্যস্ত করা কষ্টসাধ্য। কেননা বিশুদ্ধ দলিল এবং জাল দলিল বহুলাংশে হুবহু সামজ্ঞস্যপূর্ণ হতে পারে। ধারা: ৪৭১ যদি কোন ব্যক্তি প্রতারণামূলকভাবে বা অসাধুভাবে এমন দলিল খাঁটি দলিল বলে ব্যবহার করে যে দলিলিট জাল দলিল বলে জানে বা তা বিশ্বাস করে বিশ্বাস করবার আছে, তাহলে উক্ত ব্যক্তি এমনভাবে দন্ডিত হবে যেন সে দলিলটি জাল করেছে। বিশ্লেষণ: আলোচ্য ধারায় জাল দলিলকে বিশুদ্ধ দলিল বলে ব্যবহার করার অপরাধে দন্ডের বিধার করা হয়েছে। যে ব্যক্তি কোন দলিলকে জাল বলে জানে বা বিশ্বাস করে অথবা জাল বলে বিশ্বাস করবার যথেষ্ট কারণ থাকা সত্বেও একে খাঁটি বলে ব্যবহার করে বা ব্যবহার করার উদ্যোগ গ্রহণ করে সেই ব্যক্তি ৪৭১ ধারার বিধান অনুযায়ী দন্ডিত হবে। জালিয়াতির অপরাধে ৪৬৫ ধারায় দুই বত্‍সরের কারাদন্ড বা বিধান রয়েছে । কোথায় যেতে হবে: যখন কোন ব্যক্তির উত্তরাধিকার তার জায়গা জমির দলিল জালিয়াতির মাধ্যমে লঙ্ঘিত হয়, তখন সে ব্যক্তি সরাসরি আদালতের মাধ্যমে ফৌজদারী মামলায় যেতে পারে নিজস্ব আইনজীবি নিয়োগের মাধ্যমে। আর যদি আর্থিক ক্ষমতা না থাকে সেক্ষেত্রে বিভিন্ন এন.জি.ও এর মাধ্যমে যারা বিনামূল্যে মামলা করে থাকে তাদের সাহায্য নিতে পারেন।